অকাল বৃষ্টি
গৃষ্মের প্রখর রৌদ্র, কোথাও এক ফোটা বৃষ্টি নেই। প্রবল তাপের দাবদাহে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। মাঠের ফসল মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে। ফাঁকা মাঠের মধ্যে রয়েছে একটি ছোট্ট গ্রাম। গ্রামের মানুষ আজ
গণিতে স্নাতক।
তারপর মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক।
অতঃপর বিখ্যাত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেস, ব্যাঙ্গালোর থেকে এ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
তারপর ডক্টরেট। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, বোম্বাই থেকে।
এমন তো কতই হয়! তাই না?
হ্যাঁ, এমন শিক্ষাজীবন এদেশে বহু মানুষেরই আছে। ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবে।
কিন্তু যে মানুষটির কথা হচ্ছে, তিনি খানিক ব্যতিক্রমী।
তাঁর পরিবারে তিনিই প্রথম স্নাতক। এরপর মাদ্রাজ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়তে যাবার সময়ই পায়ে প্রথম জুতো পরতে পান ভদ্রলোক। তার আগে অব্দি খালিপদই ঘুরে বেড়িয়েছেন।
স্কুল শেষ করার পরপরই চেয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে। এক সপ্তাহ ভুখা অনশনও করেছিলেন এই নিয়ে। বাপের মন টলেনি।
"তুই যদি দূরের কলেজে পড়তে যাস, তবে চাষের মাঠ কি আমি একা সামলাবো? আর তোকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে গেলে আমাকে জমি বিক্কিরি করতে হয়। তুই কি চাস আমরা সবাই না খেতে পেয়ে মরি?" এই ছিল বাপের কথা।
এরপর আর কথা চলে না। ছেলেকে অতঃপর যুক্তি মেনে নিতেই হয়। সত্যিই তো, তাদের তো এই 'দিন আনি দিন খাই' অবস্থা। তাও আবার খরার দাপটে কোনও বছর ফসল ভালো না হলে তো আর কথাই নেই! বড় ক্লাসে ওর বয়সী ছেলেরা ফুলপ্যান্ট পরে আসত। ওকে কিনা বাপের পুরোনো ধুতি পরেই কাজ চালাতে হয়!
সেই বাপই অবশ্য মতবদল করলেন একসময়। ততদিনে গণিতে স্নাতক হওয়া গিয়েছে। বাড়ির কাছেই ছিল কলেজ। রোজ কলেজ যাওয়ার আগে আর পরে চাষের মাঠে বাপকে সাহায্য করতে হয়েছে। তাঁদের তো আর আলাদা করে মুনিশ রেখে চাষ করার সামর্থ্য নেই!
তবুও বাপের মন বদলেছে।
"যা হয় হোক। তুই যখন চাইছিস তো ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েই পড়। জমি বিক্রি না হয় করেই দেব। তবে দেখ, তোকে কিন্তু চাকরি একটা জোগাড় করতেই হবে। চাষীর ছেলে গ্র্যাজুয়েট হয়েছিস। আমাদের চোদ্দপুরুষে যা কেউ হতে পারেনি। তোকে আর আটকাবো না।"
সেই প্রথম বড় শহরে গিয়ে পড়ল ছেলে। এবার পায়ে জুতো উঠল। ফুলপ্যান্টও।
কুড়িয়ে বাড়িয়ে গরীবের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হয়েই গেল! পরিবারে স্নাতকই কেউ ছিল না, তায় ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর!
অবশ্য জিদ থাকলে কি না হয়! জীবনে যখন যা চেয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে পাননি কোনওটিই। যা পেয়েছেন, যেটুকু পেয়েছেন, তাতেই জান লড়িয়ে দিয়েছেন। সাফল্য এসেছে। গরীব প্রান্তিক চাষীর ছেলের লড়াই কখনও ব্যর্থ হয়না। হয়নিও।
মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পাস করার পর ভেবেছিলেন হ্যাল বা ন্যালে চাকরি জুটবে। জোটেনি। তার বদলে আইআইএস ব্যাঙ্গালোরে মাস্টার্স করার সুযোগ জোটে।
ইসরোয় চাকরি পেয়ে ভেবেছিলেন কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরির প্রকল্পে তাঁকে সামিল করা হবে। কিন্তু তাঁর ভাগ্যে জুটল বিক্রম সারাভাই সেন্টার।
তবে ঐ, যখন যে সুযোগ পেয়েছেন সেটিতেই পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছেন।
নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত ক্ষমতা ছিল। জীবনে কখনও কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী থাকেননি। পড়াশুনোয় কোনও প্রাইভেট ট্যুশনি, কোনও কোচিং নেওয়ার সামর্থ্য তাঁর ছিল না। তিনি চিরকালই বলতে গেলে একজন স্বশিক্ষিত মানুষ। কাজ করতে জানেন। কিভাবে সফল হতে হয়, তা তিনি ঠেকে শিখেছেন। দেরি হলে হবে, তবে তিনি জানেন, ধৈর্য্য ধরে পড়ে রইলে সাফল্য আসবে না এমন হতেই পারে না।
এই মানুষটি কে নিশ্চয় সকলে চিনে ফেলেছেন।
হ্যাঁ, গাঁয়ের চাষীর ছেলে তো! এত চেষ্টার পরেও চন্দ্রযান অভিযানের আশানুরূপ ফল না পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন ভদ্রলোক। আবেগ সাচ্চা মানুষেরই থাকে। কোনও এক দুর্বল মুহূর্তে হয়ত নিজেকে আর সামলাতে পারেননি তিনি। এত পরিশ্রম, এত সময়, এত অর্থ! এত প্রত্যাশা! তিনি এই ভারতের এক প্রান্তিক চাষীর সন্তান। এ সবের মূল্য তিনি বোঝেন।
হ্যাঁ, তিনি পুজো দেন। নিরীহ হিন্দুদের মতো মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন তিনি। জিহাদের নামে তো মানুষ কতল করেন না। বিজ্ঞানী হলেই যে নাস্তিক হতে হবে এমন কোনও নিয়ম তো নেই! মানুষের ধর্মবিশ্বাস তাঁর ব্যক্তিগত পরিসর। এই নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করার আগে আয়নায় নিজেদের মুখগুলো একবার দেখে নেওয়া ভালো। কত গাঁট, কত ঝুল! নিজেদের অর্জন নিজেরাই বিচার করলে মন্দ হয় না।
ডঃ কৈলাশাভাদিভু সিভান এই পবিত্র ভূমির এক আদর্শ সন্তান। তিনি আমাদের গর্ব। ব্যস, এইটুকুই বলার।
Supriti Santhal Maiti
সৌজন্যে এবং হিমু
কোনো মহাত্মা যদি নিজেকে চাঁই সম্প্রদায়ের নেতা মনে করেন, দয়া করে লিখুনঃ আমরা চাঁইয়েরা কোন পথে চলে সম্প্রদায় বা জাতিগোষ্ঠী হিসাবে উন্নত হতে পারব, আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য সংরক্ষিত হবে। নেতার কাজই তো হল আকাঙ্খিত গন্তব্যস্থলের দিকে সমর্থকদের নিয়ে যাওয়া ও সম্ভব হলে সেখানে পৌঁছে দেওয়া।
"গ্রামে গ্রামে চল" কর্মসূচী ও সদস্যকরন অভিযান। গত ১লা সেপ্টেম্বর 'অখিল ভারতীয় চাঁইসমাজ কল্যাণ পরিষদের' উদ্যোগে শুরু হয়েছে "গ্রামে গ্রামে চল" কর্মসূচী ও সদস্যকরন অভিযান। প্রথমে মালদা জেলার মানিকচক, রতুয়া ও হরিশচন্দ্রপুর ব্লকের অন্তর্গত প্রতন্ত্য চাঁই গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পূর্ব পরিকল্পনা মত গত ১লা সেপ্টেম্বর অখিল ভারতীয় চাঁইসমাজ কল্যাণ পরিষদের সদস্যগণ পৌছে যান মানিকচকে। এই জন জাগরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন, অখিলভারতীয় চাঁইসমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি প্রফেসর বিজয় কুমার সরকার, উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মাননীয় জয়রাম মন্ডল, উপস্থিত ছিলেন চাঁই সাহিত্যিক বরুন মন্ডল, উপস্থিত ছিলেন জয়রাম মন্ডল, নরেশ মন্ডল, মনোজ কুমার দাস, মিঠুন মন্ডল, রাজেশ মন্ডল, নরেন মন্ডল, রাজকুমার মন্ডল।
মানিকচকের লক্ষিকোল গ্রামের দিকে অগ্রসর হতেই দেখাদেয় রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। মানিকচক থেকে লক্ষিকোল যাওয়ার জন্য কালিন্দ্রি নদীর উপর নেই কোন ব্রিজ। লক্ষীকোলবাসী স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও কোন উন্নয়নের মুখ দেখেননি। ভোট আসে ভোট যায়, নেতা-নেত্রীরা তাদের শুধুই আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই দেননি। অগত্যা আমাদের নৌকর মাধ্যম দিয়ে কালিন্দ্রি নদী পেরিয়ে টোটো ও পায়ে হেটে পৌছে যায় সেই লক্ষীকোল গ্রামে। গ্রামের মানুষদের অভাব অভিযোগের কথা শুনতে থাকি।
লক্ষীকোল গ্রাম পেরিয়ে পায়ে আকাবাকা মাঠের রাস্তা দিয়ে আমরা হরিপুর পৌছায়।
Professor Bijoy Kumar Sarkar
Ph.D., PG Dip. in Museum Studies
Akshaya Kumar Maitreya Heritage Museum
Ex-Head, Department of History
Ex-Head, Department of Mass Communication University of North Bengal
Ex-Principal, D.N.C College
Member : International Council of Museum, Paris
Associate of South Asian Environmental Historians
Lifetime Member:-
The Asiatic Society, Kolkata
Indian History Congress, New Delhi
Paschim Banga Itihas Parishad, Kolkata
The Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka
Bangladesh History Association, Dhaka
Itihas Academy, Jagannath University, Dhaka
Museum Association of India, New Delhi
North-East India History Association, Shillong
Institute of North-East Indian Studies, Kolkata
Indian Society of Greek Roman Studies, U.P
President:-
Akhil Bharatiya Chain Samaj Kalyan Parishad